সোমবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৫

অগ্নিদগ্ধ হয়ে যে মানুষটা বেঁচে ছিলো - রাজীব রায়হান

তীব্র শীতে জবুথবু আমি,
জং ধরে গেছে আমার বুড়ো হাড়ে,
কেউ কি একটু আগুন দেবে?
ফুরিয়ে গেছে উষ্ণতা সেই কবেই ভাঁড়ার ঘরে
একটুখানি ছোট্ট আগুন,
ওম ওম হয়ে ছড়িয়ে যাবে আমার দেহের ভাজে
আটকে রাখতে পারো না আমায়?
তোমার দেহের উষ্ণ কোনো খাঁজে?
খুব সকালে একটু আগুন
করে দিতে পারো তুমি?
একটুখানি খুনসুটি আর মানভাঙানো আগুন
দেবে কি রোজই ঘুম ভাঙিয়ে? জাগ্রত হবো আমি?
আরেকটু বেশি হলেও নাহয় সয়ে নেবো সেই কষ্ট,
রাগের আগুনে হয়ে যাবে কি সকাল সন্ধ্যা নষ্ট?
হয় যদি হোক, আমার তাতে তবু আপত্তি নেই
আমি তো আগুন চেয়েছিলাম শীত থেকে বাঁচতেই
কিছুই যদি না থাকে, তবু
তোমার ঘৃণার তীব্র আগুন আমায় নাহয় দিলে
বেঁচে রবো কিবা জ্বলে পুড়ে যাবো,

সে খবর নাই নিলে

অযাচিত নক্ষত্র - অনন্ত আরফাত

শহরের শীতগুলো মাঝে মাঝে
বৃষ্টির মতো খুব ভিজিয়ে দেয় ,
রাত্রিক্লান্ত সোডিয়াম লাইটগুলো
মানুষের চোখে উকি দিয়ে দেখে
পতিতার ব্লাউজ , উচুনিচু ---
ভালবাসাগুলো ধান্ধাবাজ ফিনিক্স
পাখি হয়ে মনে মনে উড়ে ;
ফুটপাতে ভিখারি শরীরগুলো
মাঝে মধ্যে নড়ে উঠে হঠাৎ ,
ভিখিরিনী খিস্তি দেয় , বলদা ---
রাত মাপে নিঃসঙ্গ এটিএম বুথ ,
মনে পড়ে মানুষের শরীরের ঘ্রাণ
কুয়াশামাখা স্লাইডিং ডোর ---
মাঝে মাঝে ছ্যাঁচড়ের হাতে
ভালবাসাগুলো বেচা হয়ে যায় ,
কিছু শরীরের ভাজ পড়ে থাকে তবুও
ভোর রাতে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফেরে
মানুষের মতো সেইসব শরীর ;
হাস্নুহেনাগুলো মাঝে মাঝে শিস দেয়
ঘামের গন্ধের মতো ঘ্রাণ ---
ভিখিরিনী আবার জড়িয়ে ধরে
হাড়জিরজিরে ভিখারির বুক
সোডিয়াম লাইট চোখে মুছে ---
মানুষের বুক , বুকের ভাজ
শরীরগুলো তার কাছে মাঝে মাঝে
দরিদ্রতম নক্ষত্র বলে মনে হয় ,
ত্যানা ত্যানা শীত , সোডিয়াম লাইট
মানুষের মতো শরীরেরা ভিজে

সম্পর্কের সাঁকো - হাসান ইমতি

একাকিনী জলের নিস্তব্ধতার বুননে কোন
বিষুব ভাবনার ছবি তুমি নিঃশব্দে আঁকো ?
আজও কি তবে রয়েছে বেঁচে জলের
গহীন বুকে সম্পর্কের সেই পুরনো সাঁকো ?
নিঝুম রাতের নিশুতি আঁধারের নৈশব্দে
ভালোলাগা সেই সুর তুমি এখনো কি সাধো ?
আজও কি রাতের প্রশ্রয়ে আমার স্পর্শের
পুরনো সে উষ্ণতায় নিজেকে নিজে বাঁধো ?

মৌনতার দেয়ালে হেলান দিয়ে নিঃসঙ্গ
তুমি আজ কার ভাবনায় গোপনে ভেজো ?
তবে কি নীরবে রয়েছে বেঁচে আমাদের
সেই না বলা নীরব ভালোবাসা আজো ?

সীমানা বদল - দীপঙ্কর বেরা

অত্যাচারের কোন ঘর নেই
তারা বরাবরই শরণার্থী ,
পৃষ্ঠার বদল ঘটিয়ে আরো মজবুত পাহারা
দিনান্ত সেই বিকেল আনে আর
বিবেক বুঝে কড়মড়িয়ে খায়
আবার বিকেল হয়ে যায়
খবর আসে দয়ার পাত্র উপুড় করে
সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ে শালীনতা ,
দু মুঠো তার ভাতের ছবি
তাতেও মুখের হিসেব নিকেশ
রাত বেড়ে যায় রাতের কথায়
সকাল হলেই সকাল হবে কি ?

বেঁচে আছে বাঁচিয়ে ওরা বলছে তত্ত্ব কথা
ঘুরে ফিরে ঘটছে কেবল রক্তকথা রক্তকথা

রবিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৫

চোরাস্রোত - অপূর্ব ঘোষ

দুঃখ নদীর এপার ওপার নেই'তো,
মনের মধ্যে বইছে তবু সেই'তো
ঢেউ এর পরে ঢেউ ভাঙছে
কূল-ভাঙছে হায়রে !
সুখ-শৈবাল দলে দলে
যায় ভেসে যায় পলে পলে
তবুও মন সেই ঢেউয়ে'
নিত্য-ভেসে যায়রে
কত কথার বকুল মালা
কত মনের গোপন জ্বালা
যায় ভেসে যায় চোরাস্রোতে তাইনা !
নদীর বুকে ঢেউ জাগে আর
জলের বুকে বেদনা কার
যায় ভেসে যায় দেখতে
আমরা-চাইনা
আমরা শুধু ঢেউ গুনে যাই
আমরা শুধু মনকে বোঝাই
হচ্ছে দেখ দুঃখ কেমন ঢেউয়ের
পাকে জব্দ

আমরা বিভোর নতুন হাওয়ায়,
নিত্য নতুন চাওয়া পাওয়ায়
কেউ শুনিনা হৃদয় ভাঙার
গহীন চাপা শব্দ